ঢাকা, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেয়ার সুপারিশ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১৭

পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেয়ার সুপারিশ
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এ ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড হতে পারে ভেরিফিকেশনের মানদণ্ড।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনপ্রধান সফর রাজ হোসেন। এর আগে সেখানে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকদের সফর রাজ হোসেন বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের এই পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে হয়ে আসছে। এটা প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে। ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন এবং তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যায়। আরেকটি বিষয় প্রচলিত আছে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ রাজনীতি করে কিনা এবং রাষ্ট্রবিরোধী কেউ আছে কিনা। এটা ব্রিটিশদের আঙ্গিকে চিন্তা করা হতো।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি এমন একটি অভিযোগ এসেছে যে কারো আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করে কিন্তু সরকারি দল করে না তাদের অনেকের ক্ষেত্রে এসব যুক্তি দেখে চাকরি দেওয়া হয়নি। দেখা গেছে রাজনৈতিকভাবে তাদের খালা, ফুফা বা অন্য কেউ রাজনীতিতে জড়িত। পরিবারের কেউ না হলেও তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা এই প্রথাকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছি।

কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকের একজন গার্ড থেকে ক্লার্ক সবার চাকরি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় নামপরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে। পরবর্তীতে দেখা যেতে পারে যে সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন জরুরি। যেভাবেই হোক এ পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাতে ভোগান্তি না হয় সেই বিষয়ে সুপারিশ করেছি। পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে কিন্তু সেখানে আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না।

তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনেই পুলিশ গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিতে পারবে- এমন সুপারিশ করা হবে। তবে সুপারিশ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সরকার সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। ৫৪ ধারা সংশোধনেরও সুপারিশ করা হবে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা পুলিশ সংস্কার কমিশনের সব সদস্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার কথা রয়েছে। আমরা মোটামুটি মধ্য সময় এসেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে বেশকিছু কাজ করেছি। এটাকে একটা খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়। তবে আমরা যেসব সুপারিশ করছি এর কিছু কিছু বিষয় স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এ ছাড়া কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, পুলিশকে ঢেলে সাজাতে গত ৩ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠিত হয়। কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকারকর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত