‘বাবা মাইরো না মাইরো না, আর করব না’ আর্তচিৎকারের পরেও হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬
রাজধানীতে তিন ও সাত বছরের দুই ছেলেকে গলা কেটে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মো. আহাদ (৪০) নামের এক বাবা। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পল্লবীর বাইগারটেক নামক এলাকার বেপারী মার্কেটের পাশের একটি তিন তলা বাড়ির নিচতলায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত শিশুদের নাম রোহান (৭) ও মুসা (৩)।
জানা গেছে, নিহত দুই শিশুর বাবা আহাদ মোল্লা বাসাবাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এবং মা রোজিনা আক্তার মেসে রান্নার কাজ করেন। নিহত দুই শিশুর মা রোজিনা আক্তারের বাসায় সোমবার বেড়াতে আসেন তার বৃদ্ধ বাবা ও মা।
ঘটনার বর্ণনায় শিশুদের অসুস্থ সত্তরোর্ধ্ব নানা জাবেদ আলী বলেন, আমি পাশের কক্ষেই ছিলাম। যে কক্ষে ঘটনা ঘটে সেখানে দুই সন্তান নিয়ে ছিল আহাদ। আমি শব্দ পেলাম। ছোট ছেলে কান্না করে বলছিল, ‘বাবা মাইরো না, মাইরো না। আর করব না।’
জাবেদ আলী আরও বলেন, আমি তখনো বুঝতে পারেননি, আহাদ তার ছেলেদের হত্যা করছে। আমি অসুস্থ থাকায় বিছানা থেকে উঠে যেতে ৩ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। আমি গিয়ে দেখি, আমার দুই নাতিকে গলা কেটে বিছানায় ফেলে রেখেছে আহাদ, সে নিজেও বিছানায় শোয়া। এরপর আমি হামাগুড়ি দিয়ে চিৎকার করে রাস্তায় এসে মানুষজন ডাকি। স্থানীয়রা এসে ঘটনা দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই শিশুদের মা রোজিনা আক্তার বলেন, সোমবার ভোরে আমার স্বামী কাজ থেকে বাসায় ফেরেন। সকাল ৯টার দিকে আমি আমার বেড়াতে আসা মাকে নিয়ে মেসে রান্নার কাজে রওনা দেয়। এ সময় আমার স্বামী দুই ছেলেকে বাসায় রেখে যেতে বলেন। পরে মেসে পৌঁছানোর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আমার কাছে ফোন আসে আমার দুই ছেলে মারা গেছে।
তিনি বলেন, আহাদ অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত ছিল। সে প্রায়ই আমার কাছে টাকা চাইত, তবে আমার কাছে এত টাকা ছিল না। ঋণের কারণে সে ছেলেদের হত্যা করতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে ভর্তি আছেন আহাদ। তার শ্বাসনালী কেটে গেছে। আহাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ওই বিভাগের চিকিৎসক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ মামুন।
পল্লবীর ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নিহত শিশুদের মা রোজিনা এ ঘটনায় মামলা করেছেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ