আন্দোলনে আহত
৫ কর্মদিবসের মধ্যে চিকিৎসার রূপরেখা প্রকাশের সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৪
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসা বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, গণ আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় আর কোনো ঘাটতি থাকবে না। অবহেলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভে নামা ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো পাঁচ দিনের মধ্যে প্রকাশের সিদ্ধান্ত এসেছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আহতদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন তারা।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জুলাই-অগাস্ট গণ আন্দোলনে আহতদের পাশে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, আহতদের কার কোন দেশে চিকিৎসা নিলে ভালো উপশম আসবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে দ্রুত সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, আহতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আজকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হল তা আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত আকারে প্রকাশ করা হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্বল্পমেয়াদী উদ্যোগগুলো দৃশ্যমান হবে। আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা থাকবে না। এ বিষয়ে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না। চিকিৎসা সেবা কিংবা অর্থপ্রাপ্তি যেকোনো ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে, জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এসময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আহতদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা আছে, অনাস্থা আছে। কিন্তু আমরা রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেয়ার পর অনেকগুলো সমস্যা এক সাথে মোকাবেলা করতে হয়েছে। আজকে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে এগুলো আগেই ঠিক করা হয়েছিল। এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে আহতদের চিকিৎসায় একটা রূপরেখা দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
বুধবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের সামনে শ্যামলী-আগারগাঁও সড়ক অবরোধ করে রাখে কোটা সংস্কার ও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় আন্দোলনে আহতরা। চিকিৎসা নিয়ে অবহেলা ও অন্যান্য ক্ষোভ জানাতে তারা সেখানে অবস্থান নেন।
তারা অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়া নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরে গভীর রাতে সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টা বিক্ষোভ স্থলে গিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে তাদেরকে শান্ত করে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনেন।
সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আহতদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, যা সাড়ে ৫টায় শেষ হয়।
বৈঠক শেষে জাতীয় কর্তব্য পালনে কেউ অবহেলা করবে না এমন আশা প্রকাশ করে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, আহত ও শহিদরা কোনো সরকারের সাথে সম্পর্কিত নয়, তারা রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কিত। তাদেরকে শ্রদ্ধা করা, সম্মান করা দেশের সব নাগরিকের দায়িত্ব। বর্তমান সরকারের জায়গা থেকে সেটা সব সময় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক আলাপে, মিডিয়াতে তাদের বিষয়ে কম উঠে আসছে। এটা সরকারের নির্দেশনার বিষয় ছিল না, মিডিয়াগুলো তাদের নিজস্ব জায়গা থেকেই এটা করার কথা ছিল। জাতীয় কর্তব্য পালনে আমরা কেউ যেন অবহেলা না করি। শহীদ পরিবার ও আহতদের নিয়ে সরকারের উপর দায় চাপিয়ে বাকিরা সবাই নির্বাচন নিয়ে আলাপ করছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি