ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : ৪২ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্বামীকে নিহত দেখিয়ে স্ত্রীর মামলা, তিন মাস পর থানায় হাজির স্বামী

  প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০

স্বামীকে নিহত দেখিয়ে স্ত্রীর মামলা, তিন মাস পর থানায় হাজির স্বামী
ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় স্বামী নিহত হয়েছেন অভিযোগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলার তিন মাস পর থানায় হাজির হলেন স্বামী। বললেন, এটি তার জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এদিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন তার বাবা ও দুই ভাইকে নিয়ে সোমবার রাত ৯টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানায় হাজির হন। তার দাবি, তার অজান্তে স্ত্রী কুলসুম ঢাকার আদালতে তাকে ‘মৃত দেখিয়ে’ হত্যা মামলাটি করেছিলেন, যা এখন তদন্ত করছে সাভারের আশুলিয়া থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে সুরমা এলাকায় আলোচনা তৈরি হয়।

দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আবুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, জীবিত থাকার বিষয়ে আল আমিন থানায় বসে ভিডিওতে সবকিছু বলেছেন। হত্যা মামলাটি আশুলিয়া থানার তদন্তাধীন হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাকিব মঙ্গলবার সকালে এসে তাকে নিয়ে গেছেন।

ওসি বলেন, আল আমিনের পরিবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পিরোজপুর এলাকায় ৪০ বছর ধরে বসবাস করছেন। কাজের সূত্রে থাকতেন মৌলভীবাজারের জুড়িতে। তার শ্বশুর বাড়ি আশুলিয়ায়।

পুলিশ সদস্যরা বলছেন, সরকার পতনের দিন ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আশুলিয়া থানা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ায় ঘটনা ঘটে। সেসময় ভ্যানে স্তূপ করে রাখা লাশের ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি করে। ভ্যানে রাখা নিহতদের একজনের পরিচয় অজ্ঞাত রয়ে যায়।

সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিকে নিজের স্বামী আল আমিন দাবি করে কুলসুম নামে ওই নারী ২৪ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করার আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে সেটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হলে তদন্তে নামে পুলিশ।

পরে কুলসুমের স্বামী আল আমিন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় অবস্থান করছে এমন তথ্যে অনুসন্ধানে নেমে তার ভাইয়ের খোঁজ পায় র‌্যাব। তার সঙ্গে কথা বলে র‌্যাব সদস্যরা নিশ্চিত হন, মামলায় মৃত দেখানো আল আমিন বেঁচে আছেন।

এর মধ্যেই সোমবার রাতে দক্ষিণ সুরমা থানায় হাজির হয় আল আমিন। সেখানে ধারণা করা এক ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়, ভাই, আমি মরি নাই, কেউ যদি আমার অজান্তে কাগজে-কলমে মাইরা ফালায়, তাহলে আমার কী বা করার আছে? আমারে যে মরা দেখাইয়া মামলা করছে আমার বৌ, তা আমি জানতাম না। যখন শুনলাম, তখন ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি।

তাদের এক কন্যা সন্তান থাকার তথ্য তুলে ধরে আল আমিন বলেন, কয়েক মাস ধরে পারিবারিক কলহ বেড়ে যাওয়ায় সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। দেশে গণ্ডগোলের পুরোটা সময় আমি ও আমার স্ত্রী মৌলভীবাজারের জুড়িতে অবস্থান করেছি। সেসময় আশুলিয়ায় একবারের জন্যও যাইনি। অথচ আমাকে মৃত দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে আমার স্ত্রী।

এ মামলার বাদীর ছবি দেখে আল আমিন নিশ্চিত হয়েছেন, ছবির মানুষটি তার স্ত্রী।

ছেলেকে মৃত দেখিয়ে মামলার ঘটনায় হতবাক আল আমিনের বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, এমনটা হওয়ায় আমাদের পুরো পরিবার আতংকিত। ছেলের বৌ কুলসুম কেন এমনটি করেছে তা মাথায়ও আসছে না। বিষয়টি নিয়ে কুলসুমও কোনো কথা বলছে না।

এ বিষয়ে জানতে আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর এবং তদন্ত কর্মকর্তা রাকিবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা সাড়া দেননি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত