ঢাকা, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : ৩৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাগেরহাট

বিএনপি নেতা খুন, জনপ্রিয় হলেও উঠছে নানান অভিযোগ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১:১৩

বিএনপি নেতা খুন, জনপ্রিয় হলেও উঠছে নানান অভিযোগ
বিএনপি নেতা সজীব তরফদার | সংগৃহীত ছবি

বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য সজীব তরফদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি।

বুধবার দুপুরে নিহত বিএনপি নেতা সজীবের ময়নাতদন্ত বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। বিকাল ৫টায় কাশিমপুর ফুটবল মাঠে নামাজে জানাজা শেষে ডেমায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের ডেমা গ্রামে সজীবের বাড়ি। তিনি ডেমা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তবে তার পরিবারের সদস্যরা জানান, এলাকায় জনপ্রিয় নেতা ছিলেন সজীব। তার জনপ্রিয়তাই কাল হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, বিএনপির রাজনীতি করার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন তিনি। তবে সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ঘের দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে, যার জেরে তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে একাধিকবার নির্যাতনসহ বিভিন্ন মামলায় জেল খেটেছেন সজীব তরফদার। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ডেমা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে চিংড়িঘের, গরু, মহিষ ও জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তবে তার মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে কেউ আর তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করছেন না।

স্থানীয় আরও কয়েকজন জানান, বড় ধরনের চাঁদাবাজি করছিলেন তিনি ও তার দলবল। এখানে ঘেরের এলাকা। প্রচুর কাঁচা টাকা এই এলাকায়। চাঁদাবাজি, দখল নিয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। হত্যার পেছনে এটাও একটা কারণ হতে পারে।

কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা করা হয়নি। তবে ঘটনার পর থেকে পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছায়া তদন্ত শুরু করেছে। তারা বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে কাজ শুরু করেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, পাঁচটি বিষয়কে সামনে রেখে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে তারা। এরই মধ্যে কয়েকজন সন্দেহভাজনকেও নজরদারিতে রাখা হয়েছে, যাঁরা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার আগে থেকেই সজীব তরফদারকে অনুসরণ করছিলেন।

এদিকে বুধবার দুপুরে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম, বিএনপি নেতা শেখ মুজিবর রহমান, কামরুল ইসলাম গোরা, শেখ সাহেদ আলী রবি, সৈয়দ নাসির আহম্মেদ মালেক, খাদেম নিয়ামূল নাসির আলাপ প্রমুখ।

বক্তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত গডফাদার ও ঘাতকদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান।

এদিকে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত গডফাদার ও কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডেমা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চাচা কামাল তরফদারকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাগেরহাট-রামপাল সড়ক দিয়ে বাগেরহাট শহরে যাচ্ছিলেন সজীব তরফদার। দুপুর ২টার দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মির্জাপুর আমতলা মসজিদের সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার গতিরোধ করে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এ সময় গুলিতে মোটরসাইকেলে থাকা সজীবের চাচা কামাল তরফদার আহত হন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো

বাংলাদেশ জার্নাল/এফএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত