ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ছাত্রলীগ কর্মীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ

  প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০:১৮  
আপডেট :
 ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৩১

ছাত্রলীগ কর্মীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ
আজিজুল হক (আকাশ)। ছবি: সংগৃহীত

জামায়াত-শিবির পরিচয়ে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের সময় ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার ১২ সহপাঠী মারধরের শিকার হয়েছেন।

পরে আজিজুল হক (আকাশ) নামের ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করা হলে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হামলাকারীরা নিজেদের শিবিরের নেতাকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

হামলার শিকার আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মারধরের পর তাকে বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে জামায়াতের করা আগের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বোয়ালিয়া থানা-পুলিশ জানায়, কয়েকজন লোক জামায়াতের নেতাকর্মী পরিচয়ে ছাত্রলীগ কর্মীকে থানায় সোপর্দ করেছেন। তবে তাদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে জামায়াত ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ২৫ জন শিক্ষার্থী পঞ্চগড় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন যান। সেখানে ‘বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে উঠে বসার পর ৪০-৪৫ জন ব্যক্তি এসে জানালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিভাগের নাম জানতে চান। শিক্ষার্থীরা বিভাগের নাম জানালে তারা সানি নামে কোনো শিক্ষার্থী ট্রেনে আছেন কি না, জানতে চান। সানি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এই নামের কেউ নেই জানালে তারা আকাশকে দেখে সন্দেহ করেন এবং সানি ভেবে ধাওয়া করেন। এ সময় আজিজুল ট্রেন থেকে নেমে দৌড় দেন। হামলাকারীরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে ধাওয়া করেন। আজিজুলকে বাঁচাতে সহপাঠীরা পেছন পেছন ছুটে যান। একপর্যায়ে হামলাকারীরা আজিজুলকে ধরে মারধর শুরু করেন। এ সময় হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করলে তার মাথা ফেটে যায়। সহপাঠীরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আজিজুলের মুঠোফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নিয়ে তাকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে চান। পরে শিক্ষার্থীরা জোরাজুরি করলে তারা আজিজুলকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যান। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন (সাজ্জাদ বকুল) বলেন, রাতে বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকসহ তারা থানায় গিয়েছিলেন। প্রথমে আহত আকাশের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না, তা থানার ওসি তখন জানাতে পারেননি।

অন্যদিকে, অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবদুল মোহাইমেন বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে শুনেছি। তবে ওই শিক্ষার্থী কে বা কেন মারধর করা হয়েছে, তা জানি না। ওই ঘটনার সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির জড়িত নয়।

একই দাবি করেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. সিফাত আলম। তিনি বলেন, একটা পক্ষ শিবিরের নাম ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা চেষ্টা করতে পারে। কারও ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করব।

আর রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কে বা কারা জামায়াতের নাম ব্যবহার করে এটা করেছে, তা জানি না। তবে জামায়াতের কেউ জড়িত থাকলে আমি বিষয়টি জানতাম বা সেখানে উপস্থিত থাকতাম। তবে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের কোনো সক্রিয় সদস্য যারা আন্দোলনে হামলা বা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, তাদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।

এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মডেল থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, গতকাল রাতে জামায়াতের কিছু লোক এক ছাত্রলীগ কর্মীকে থানায় সোপর্দ করেছেন। পরে জামায়াতের করা আগের এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত