বিবৃতি দিয়ে প্রকাশ্যে এলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি-সেক্রেটারি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:২২ আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:২৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার প্রকাশ্যে এসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সেক্রেটারি ও প্রচার সম্পাদক।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নামে এক ফেসবুক পেজে প্রচার সম্পাদক মো. ইব্রাহীম আলীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি প্রকাশের পর তাদের পরিচয় জানা যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন ও সেক্রেটারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম।
প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলীর পরিচয়ও জানা গেছে। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ওই বিবৃতি বলা হয়, শিবিরকে জড়িয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন শিকদার এবং সেক্রেটারি মো. আসাদুল ইসলাম যৌথ বিবৃতিতে বলেন, গত ১০ অক্টোবর ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে : গোপনেই সব দখলে নিতে মরিয়া শিবির’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে শাখা শিবিরকে জড়িয়ে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
প্রতিবেদনে ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সাধারণ ছাত্রদের শিবির ট্যাগ দেওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি একটি চরম মিথ্যাচার। আওয়ামী শাসনামলে ছাত্রশিবির ছাত্রলীগ কর্তৃক ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। বিভিন্ন সময় ভয় ভীতি দেখিয়ে ছাত্রশিবিরের ভাইদের কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে। মামলা হামলা দিয়ে শিবিরের জনশক্তিদের হয়রানি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অনেক দায়িত্বশীল ভাইয়ের অবৈধভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে এবং অনেক ভাই ছাত্রলীগের রোষানলে পড়ে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি। সুতরাং সাধারণ ছাত্রদের শিবিররের কর্মীদের দ্বারা শিবির ট্যাগ দেওয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং প্রকাশ্য মিথ্যাচার।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন প্লাটফর্ম নিয়েও শিবিরের নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্মটি ছিল একান্তই সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি প্লাটফর্ম। আন্দোলনে যারা সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের দ্বারাই এই প্লাটফর্মটি পরিচালিত হচ্ছিল।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন নামে যে প্লাটফর্মটি আছে সেটি বিভাগ ভিত্তিক সকল শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত। অবকাশ ভবনের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নিয়েও মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। অবকাশ ভবনের সকল সংগঠন তাদের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত। প্রত্যেক ক্লাবের নির্ধারিত নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমেই তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। সেখানে ছাত্রশিবিরের হস্তক্ষেপের প্রশ্ন তোলাটাই অযৌক্তিক।
যৌথ বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির তালা ভেঙ্গে শিবির পন্থী সাংবাদিকরা সমিতি দখল করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সাংবাদিক সমিতির নিজস্ব সাংবাদিকরা তাদের কমিটির মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেখানে শিবিরের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
প্রতিবেদনে ছাত্রশিবিরের শাখা সভাপতির উদ্ধৃতি দিয়ে যে বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে সেটিও মিথ্যা। এ ব্যাপারে শাখা সভাপতির সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ না করেই প্রতিবেদকের মনগড়া বক্তব্য শাখা সভাপতির নামে প্রচার করা হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা আরো বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে থেকে এবং সাথে নিয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবি আদায়ে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাই আমরা শাখা সংগঠনকে নিয়ে এমন মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দেশের প্রচলিত আইনের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি সাংবাদিক বন্ধুদের সত্য সংবাদ প্রচারে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এফএম