বড়পুকুরিয়া কয়লখনি এলাকায় ক্ষতিপুরণের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৩৫ আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:০১
দিনাজপুর পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির চত্বরে ১৩টি গ্রামের ঘর-বাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপুরণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্ত ১৩টি গ্রামের ৩ হাজার মানুষ এ বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি. ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিতভাবে অভিযোগ করি। আগামী ২০ দিনের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের নিকট ঘর-বাড়ি সার্ভের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই।
গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, বৈগ্রাম-কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বর পাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জ্জবর পাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দূর্গাপুরসহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তদের পুনরায় ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছিলাম কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেই কারণে আজ আমরা এই বিক্ষোভ সমাবেশ করতে বাধ্য হয়েছি।
বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন আমাদের কিছুই বাকি নাই। বর্তমান যে গ্রামগুলি রয়েছে সেই গ্রামগুলির জনসাধারণ আমরা রাতে ঘুমাতে পারছি না। প্রতি মুহূর্তে সামনে বিপদ দেখছি।
চৌহাটি গ্রামের মোছাঃ মোসলেমা বেগম ও মালেকা বেগম বলেন, খনি হওয়ার কারণে আমাদের বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রতিদিন বাড়ি ফেটে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আমাদের ক্ষতিপূরণ দিবে বলে আশ্বাস দিলেও এখন আর দিচ্ছে না। এভাবে আমরা কিভাবে বসবাস করব?
আমাদের ৬ দফা চুক্তির দাবিসমূহ:
(০১) খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার হতে চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও গত ৫ বছরেও তা দেয়া হয়নি, দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের স্থায়ী চাকরি দিতে হবে।
(০২) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ১৩টি গ্রামের বাড়ি-ঘর ফাটল, কাঁপুনি, ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে তাদেরকে দ্রুত পুনর্বাসন করতে হবে।
(০৩) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে।
(০৪) ক্ষতিগ্রস্তদের এককালীন অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে।
(০৫) ক্ষতিগ্রস্তদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে।
(০৬) ক্ষতিগ্রস্তদের যাদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদেরকে কয়লা উৎপাদন বোনাস ৫% দিতে হবে।
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ