ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

দিনাজপুরে পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:১৭

দিনাজপুরে পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
দিনাজপুর পর্যটন মোটেল। ছবি: প্রতিবেদক

দিনাজপুর পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক ফিরোজ আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও কর্মচারীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে কয়েকদিন আগে পর্যটন করপোরেশন চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছেন দিনাজপুর পর্যটন মোটেলের কয়েকজন কর্মচারী।

অভিযোগ পত্র হতে কর্মচারীরা জানান, বর্তমান ইউনিট ব্যবস্থাপক ফিরোজ আহমেদ আবাসিক শাখা থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ শাখা পর্যন্ত সব জায়গায় আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারী ও কর্মচারীদের ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছেন। ব্যবস্থাপকের এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন মোটেলের পরিবেশক মাসুদার রহমান। তার অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে চাকরি হতে অব্যাহতি দিয়েছেন মনোয়ার হোসেন নামের এক কর্মচারীকে। পরে অন্যদেরও চাকরি হতে অব্যাহতি, বদলীর ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন।

বর্তমান ম্যানেজার কার্ড এন্ট্রি ছাড়া গেস্টকে অবস্থান করানো ও একটি কক্ষে দুইজনের অধিক গেস্ট অবস্থান করিয়ে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে প্রতি মাসে আবাসিক ও রেস্তোরাঁ শাখা থেকে গড়ে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা অন্যায়ভাবে আর্থিক অনিয়ম করে তার ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টে জমা করেন। আমাদের পরিবার পরিজনও কেউ তার নিকট নিরাপদ নয়। তিনি প্রতি রাতে ও দিনে আবাসিক ৪০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান করেন। ইচ্ছে করে চতুর্থ তলার সিসি টিভি ক্যামেরা নষ্ট করে রেখেছেন। সেখানে মেয়েদের নিয়মিত আসা যাওয়া চলে। বেলম্যান হাফিজার রহমান প্রতিবাদ করলে তাকে ডিউটি বন্ধের ভয় দেখিয়ে ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ) টাকা দাবী করে, পরে হাফিজার রহমান ব্যবস্থাপকের হাতেপায়ে ধরে ৪০,০০০/-(চল্লিশ হাজার) টাকা দেয়ার পর তার ডিউটি বহাল রাখে।

বাংলাদেশ পর্যটন মোটেলে কর্মচারীদের অভিযোগের পরে ম্যানেজার কর্মচারীদের হুমকি-ধামকি প্রদান ও ক্ষমতা দেখিয়ে একটি কাগজে তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগে মিথ্যা মর্মে কর্মচারীদের স্বাক্ষর নিয়ে হেড অফিসে পাঠান। পরে কর্মচারীরা হুমকি-ধামকির ঘটনা উল্লেখ করে আবারও চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেছেন।

কর্মচারী হাফিজার রহমান, আব্দুর রশিদ, আশরাফুল ইসলাম, খোরশেদ আলমসহ কয়েকজন কর্মচারী বলেন, অভিযোগ করার পরে বিকেল থেকে ম্যানেজার তার ঘনিষ্ঠ দুইজন কর্মচারীসহ আমাদের উপরে চড়াও হন। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছে। ম্যানেজার আমাদেরকে চাকরি থেকে বাদ দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে পরে একটি কাগজে কয়েকজনের স্বাক্ষর নিয়ে হেড অফিসে পাঠান। আমরা ছোট চাকরি করি। পান থেকে চুন খসলেই ম্যানেজার আমাদের ডিউটি থেকে বাদ দেয়ার হুমকি-ধামকি দেন।

কয়েক মাস আগে চাকরিচুত্য হওয়া মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে চাকরি হারিয়ে বউ-বাচ্চা নিয়ে ভীষণ কষ্টে দিন পার করছি। হেড অফিসেও দৌড়াদৌড়ি করেছি। কেউ কোন কথা শুনে না। ম্যানেজার তার ক্ষমতা দেখান আর বলেন, তোরা আমার কিছু করতে পারবি না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী বলেন, ‘এক নারী ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। এসবের ভিডিও রেকর্ডসহ আরও বেশ কিছু ভিডিও রেকর্ডিংও আছে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে চাকরি করছি, গত কয়েকমাসে অনেক খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে। হেড অফিস থেকে তদন্ত আসলে দেখানো হবে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক ফিরোজ আহমেদ বলেন, দিনাজপুর পর্যটন মোটেলের বেশ কয়েকজন কর্মচারী রয়েছে যারা দীর্ঘদিন যাবত এখানে কর্মরত রয়েছে। তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে ঢাকায় পাঠিয়েছে। পর্যটন কর্পোরেশন চেয়ারম্যান বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তিনি আরও বলেন, আপনাদের চায়ের দাওয়াত রইলো, আমার পর্যটন মোটেলে আসেন কথা বলবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত