সাভারে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ, সড়কে যানজট
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১৯:১০ আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১৯:১৯
ঢাকার সাভারে অবস্থিত ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) সামনে আজ সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
আজ সকাল ৭টা থেকে বিক্ষোভের কারণে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়কের উভয় পাশের অন্তত ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বেপজা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সড়ক ছেড়ে দেন তাঁরা।
এই কর্মসূচির কারণে ভোগান্তিতে পড়েন সংশ্লিষ্ট যাত্রী ও চালকেরা। ডিইপিজেডের আশপাশে বেশ কয়েকটি কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যের উপস্থিতি ছিল।
চাকরিপ্রত্যাশী ও ডিইপিজেডের কর্মকর্তারা বলেন, আজ সকাল থেকে পুরাতন ডিইপিজেডের সামনে শতাধিক লোক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের উভয় পাশে বাঁশ দিয়ে আটকে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজট তৈরি হয়। ডিইপিজেডের মূল ফটকের ভেতরের অংশে অবস্থান নেওয়া সেনাবাহিনী ও আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১–এর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। বেলা ১১টার দিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে গেলেও পরে আবার অবরোধ শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর থেকেই ডিইপিজেডের সামনে অবস্থান নেন চাকরিপ্রার্থীরা। কাজে যোগদানের উদ্দেশ্যে আসা বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের মূল ফটকে আটকে দেন তাঁরা। বেশ কয়েকজনকে মারধরও করা হয়। এ ছাড়া নতুন ডিইপিজেডের কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষীও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চাকরিপ্রত্যাশী ও ডিইপিজেডের কর্মকর্তারা বলেন, আজ সকাল থেকে পুরাতন ডিইপিজেডের সামনে শতাধিক লোক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের উভয় পাশে বাঁশ দিয়ে আটকে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজট তৈরি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাকরিপ্রত্যাশী একজন নারী বলেন, ‘আমরা কোনো ঝামেলা করি নাই। আমরা চাই চাকরি। এখানে নারী-পুরুষ সবাইকেই সমানভাবে চাকরি দিতে হবে। কয়েক দিন ধরেই আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না।’
ডিইপিজেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রোববার চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাঁদের সিভি জমা দিতে বলা হয়। অনেকে সিভি জমাও দিয়েছেন। তবে বেশ কয়েকজন সিভি জমা না দিয়ে নিয়োগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলেন। আজ একাধিকবার তাঁদের নিয়ম অনুসারে সিভি জমা দিতে বলার পরও তাঁরা সিভি দিতে অস্বীকৃতি জানান।
চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের কাজের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণসহ আরও কিছু দাবি তোলেন।
তবে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) তথ্য বলছে, ঢাকা ইপিজেডে মোট শ্রমিক সংখ্যা ৭৯ হাজার ৫৮৮ জন। এদের মধ্যে নারী শ্রমিক ৪০ হাজার ৮১৮ জন এবং পুরুষ শ্রমিক ৩৮ হাজার ৭৭০ জন। শতকরা হিসেবে ৫১ ভাগ নারী ও বাকি ৪৯ ভাগ পুরুষ শ্রমিক।
বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বেপজার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, সহনশীলতা ও সহানুভূতির সঙ্গে সুষ্ঠু সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে একটি পক্ষের সঙ্গে যখন কথা বলা হচ্ছে পেছনেই আরেকটি পক্ষ আগেই মানি না বলে স্লোগান দিচ্ছে। একেক গ্রুপ একেক সময় একেক বক্তব্য উপস্থাপন করছে।
প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী কাজের ভিন্নতার কারণে নারী–পুরুষের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত হচ্ছে না বলে জানান বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) আনোয়ার পারভেজ। তিনি বলেন, ইপিজেডে যোগ্যতার ভিত্তিতে শ্রমিক নেওয়া হয়। সেখানে নারী পুরুষের ভেদাভেদ করা হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানে যেমন গার্মেন্টসে হয়তো নারী শ্রমিক বেশি দরকার; তাই সেখানে নারী শ্রমিক কিছুটা বেশি। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেমন সোয়েটার বা অ্যাকসেসরিজ ধরনের; সেখানে পুরুষ শ্রমিক বেশি দরকার।
চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়ে আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বেপজার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, সহনশীলতা ও সহানুভূতির সঙ্গে সুষ্ঠু সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে একটি পক্ষের সঙ্গে যখন কথা বলা হচ্ছে পেছনেই আরেকটি পক্ষ আগেই মানি না বলে স্লোগান দিচ্ছে। একেক গ্রুপ একেক সময় একেক বক্তব্য উপস্থাপন করছে।’
আনোয়ার পারভেজ আরও বলেন, বেপজার নিজস্ব হেল্পলাইন আছে (১৬১২৮); যেখানে শ্রমিকেরা ২৪ ঘণ্টা যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের অভিযোগ/ অনুযোগ জানাতে পারেন। বেপজা অভিযোগ আমলে নিয়ে সমাধান করে থাকে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসবিটি