ঢাকা, শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

গাজীপুরে মিলল মতিউরের ৬০ বিঘার শুটিং স্পট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৬:১৮

গাজীপুরে মিলল মতিউরের ৬০ বিঘার শুটিং স্পট
গাজীপুরের পূবাইলে মতিউর ও তাঁর স্ত্রী ৬০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের পূবাইলে মিলল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মতিউর রহমানের ৬০ বিঘা জমি ওপর পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট। আপন ভূবন নামের এই পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পটটি গাজীপুরের পূবাইলের খিলগাঁও এলাকায়। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে জমি জবর দখলের অভিযোগও। কিছু জমি ভাড়া নেয়া হলেও অনেকের জমি জবর দখল করেছেন মতিউর।

ভূমি অফিসের তথ্যে, জমির একটি অংশ রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী নরসিংদীর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি, তাদের ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও মেয়ে ফারজানা ঈপ্সিতার নামে। তবে এক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানালেন, জোরপূর্বক তার কাছ থেকে ২৬ শতাংশ জমি মতিউর দখল করে নেন। এক পর্যায়ে গিয়ে দেখা যায়, তিনি সেই জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন।

দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর পিকনিক স্পটটির আগের সব কর্মীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নিয়োগ দেয়া হয়েছে নতুনদের। তবে নতুনদের মধ্যে অনেকেই জানেন না এর মালিকানা সম্পর্কে। পিকনিক স্পটে কর্মরত এক কর্মী জানান, তিনি সেখানে কাজ করছেন দেড় মাস। এ সময়ের মধ্যে তিনি স্পটের মালিক বা তার স্ত্রী কাউকেই সেখানে আসতে দেখেননি।

প্রসঙ্গত, এবার কোরবানির ঈদে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত। তার পরই আলোচনায় আসে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ, আয় ও ব্যয়ের তথ্য। এনিয়ে খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খোদ এনবিআরও তার আয়কর রিটার্নে দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।

মূলত মতিউর রহমান কাস্টমস কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুদকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে।

সাধারণ একজন চাকরিজীবী হয়েও এ পর্যন্ত শতকোটি টাকা সাদা করেছেন। বসুন্ধরায় দুই কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট এবং ধানমন্ডিতে ৫ কাঠায় আলিশান ৭ তলা বাড়ির মালিক। যার মূল্য ৪০ কোটি টাকা। ভালুকার সিডস্টোর এলাকার পাশেই প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর গ্লোবাল জুতার ফ্যাক্টরি। এ ছাড়া রয়েছে ৬০ শতাংশ জমি।

জেসিক্স নামে একটি যৌথ ডেভেলপার কোম্পানি রয়েছে। বসুন্ধরার ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন আছে। গাজীপুর সদরে ৮টি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তার স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৪.০৩ শতাংশ, গাজীপুর থানার খিলগাঁও মৌজায় ৬২.১৬ শতাংশ জমি রয়েছে।

ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে ১৪.৫০ শতাংশ জমি আছে গাজীপুরে। যার মূল্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা। তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে আছে একাধিক দামি গাড়ি। তার নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫০ কোটি টাকার বেশি এফডিআর করা আছে। তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। বিভিন্ন নারীর সঙ্গেও তার সম্পর্ক আছে।

ড. মতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স বিষয়ে সম্মান ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রিস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ভ্যাট এবং কাস্টমস বিষয়ে দেশ-বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত