বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আত্মহত্যা, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মামলা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪, ১২:১৯
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলের আত্মহত্যাকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে ঘটনার দেড় মাস পর আদালতে মামলা করেছেন আব্দুল আজিজ নামে এক ব্যক্তি। আজিজের ছেলে দুলু মিয়া তার ভাইয়ের শ্বশুর আসাদ আলীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে বিষ পান করে আত্মহত্যা করলেও তাকে আসামি না করে আসামি করেছে যাদের সাথে তার জমি নিয়ে বিরোধ তাদের। আব্দুল আজিজ ওই উপজেলার ধুবনী গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আব্দুল আজিজের ছেলে দুলু মিয়া (১৯)। তার বড় ভাইয়ের শালিকাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু দুই পরিবারে এ বিয়েতে রাজি নয়। এ ঘটনার জের ধরে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে বিষ পান করেন। ৯ ডিসেম্বর সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ওই সময় হাতীবান্ধা থানায় দায়েরকৃর্ত এক অভিযোগে আজিজ দাবি করেন তার ছেলে দুলু মিয়া বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু ঘটনার দেড় মাস পর আব্দুল আজিজ আদালতে মামলা করে দাবি করেন তার ছেলে দুলু মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সেই মামলায় তার ছেলের শ্বশুরকে আসামি না করলেও আসামি করেছেন তার সাথে জমি নিয়ে বিরোধ এমন ৫ জনকে। এ ছাড়া ওই মামলায় যাদের সাক্ষী করা হয়েছে তারাও জানেন না এ মামলার বিষয়ে কিছু।
আব্দুল আজিজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে পাশ্ববর্তী ডিমলা উপজেলার ছাতুনামা এলাকার লালু মিয়ার ছেলে সোনাউল্ল্যার। ওই ঘটনার জের ধরে ছেলের আত্মহত্যাকে হত্যা দাবি করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী আদালতে এক মামলা দায়ের করেন আব্দুল আজিজ। সেই মামলায় আসামি করা হয় সোনাউল্ল্যাসহ তার ভাই ও ছেলেসহ ৫ জনকে। অথচ আজিজের ছেলে দুলু মিয়া যে তার বড় ভাইয়ের শ্বশুর আসাদ আলীর বাড়িতে গিয়ে আত্মহত্যা করেন এজাহারের সেই আসাদ আলীর নাম নেই।
কথা হয় হত্যা মামলার সাক্ষী সিরাজ মিয়া, আব্দুল খালেক ও হযরত আলীর সাথে। তারা জানান, দুলু মিয়া তার ভাইয়ের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে বিষ পান করেন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আমরা হাতীবান্ধা হাসপাতালে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক দিন পরে মারা যায় দুলু মিয়া। তারা দাবি করেন, ওই ঘটনার সাথে সোনাউল্ল্যাসহ তার পরিবারের যে ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।
এ নিয়ে একাধিক বার আব্দুল আজিজের বাড়ি গেলেও তার দেখা পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী সাহেরা বেগম বলেন, সোনাউল্ল্যার সাথে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। ওই ঝামেলা মিটে গেলে ওই মামলাও মিমাংশা হবে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ওই সময় আব্দুর আজিজ নিজেই দাবি করেছেন তার ছেলে বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনার দেড় মাস পর কি কারণে আদালতে হত্যা মামলা করলেন সেটা তিনি ভালো বলতে পারবেন। আজিজের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ এমন ব্যক্তিকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। আদালত যে নির্দেশ দিবে সেই নির্দেশের আলোকে পুলিশ আইনী ব্যবস্থা নিবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ