দিনাজপুরে আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক
২০ হাজার ৫৯০ হেক্টরে চাষ
সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:২৬
গত বছরের মতো এবারও ভালো দাম ও বেশি লাভের আশায় দিনাজপুর সদর, খানসামা, ফুলবাড়ী, কাহারোল, বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সোমবার (২০ নভেম্বর) দিনাজপুরের কাহারোলের কান্তজিও এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, জমি প্রস্তুত ও আলু রোপণ চলছে। অনেকে জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার ও বীজ সংগ্রহ করছেন। দল বেঁধে চাষিদের আগাম জাতের আলু রোপণ করতে দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের ধান কেটে গ্রানুলা, স্টোরিজ, সেভেন জাতের আলুসহ মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন জাতের বীজ-আলু লাগাচ্ছেন তারা।
সরকারি, বেসরকারি ও কৃষক পর্যায়- এই তিন স্তরেই বেড়েছে বীজ-আলুর দাম। এ ছাড়া সার, কীটনাশক, হালচাষ ও শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় আলু উৎপাদনে খরচ বাড়বে বলে জানান কৃষকরা। আলু চাষিরা নিজেরাই প্রতি বছর বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন। অনেকে আবার বাজার থেকে বীজ কিনে রোপণ করেন। তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অনেকে তাদের জমিতে আলু চাষ শুরু করেছেন।
কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। কৃষকরা জানান, গত বছর আগাম আলু উত্তোলন করে ৩০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। তারপরও প্রকৃত চাষিদের হাত থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে সেই আলুর দাম দ্বিগুণ হয়। এজন্য এবারও বেশি জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আলু রোপণ করছি।
কান্তজিও এলাকার আলু চাষি আবু হারিফ বলেন, আমাদের এলাকার মাটি উঁচু এবং বালু মিশ্রিত হওয়ায় বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আগাম আলু চাষে তেমন কোনো ভয় থাকে না। ফলনও ভালো হয়। উৎপাদিত আলু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। অন্যান্য ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক অবদান রাখে আগাম আলু চাষ। যার আলু যত আগে উঠবে সেই কৃষক তত ভালো দাম পাবেন। তাই সবাই লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষে মাঠে কাজ করছি।
কৃষি বিভাগ জানায়, উঁচু মাটি আগাম আলু চাষের জন্য খুব উপযোগী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠের পর মাঠ আগাম আলু চাষে কাজ করছেন কৃষক। আগাম জাতের আলু চাষে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার জানান, এলাকাটি মূলত উঁচু এলাকা হওয়ায় আলু চাষের জন্য বেশি উপযোগী। উপজেলায় চলতি বছর ২ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৩৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ১ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, দিনাজপুর জেলায় ২০ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হচ্ছে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ৬০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলুর বীজ রোপণ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি