শেরপুরে দুর্গাপূজা ঘিরে উৎসবের আমেজ
সুজন সেন, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২২:০৮ আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২২:২২
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মন্দিরের পুরোহিতরা জানিয়েছেন, আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে এই পূজা। এ কারণে শেরপুরের বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, মহল্লা এবং নিজস্ব বাসা-বাড়িতে পূজার আয়োজন ঘিরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন মহল্লায় ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। তবে জেলা শহরের অদূরে সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের বয়ড়া পালপাড়ায় চলছে রেডিমেড এবং অর্ডারকৃত প্রতিমা তৈরির কাজ।
পালপাড়ার প্রতিমা কারিগর গোপাল চন্দ্র পাল বলেন, অন্য বছরের মতো এবারও তারা রেডিমেড এবং অর্ডারকৃত প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে নিয়ে এসেছেন। এখন শুধু ফিনিশিং এবং রঙের কাজ বাদ রয়েছে। আগের মতো লাভ না হলেও বাপ-দাদার ঐতিহ্য ও পেশা ধরে রেখে কোনো রকমে টিকে আছেন তারা।
স্থানীয় লক্ষণ চন্দ্র পাল বলেন, বয়ড়া পালপাড়ার চারটি পরিবারের ২৫-৩০ জন সদস্য দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ করে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করে অর্ডার সরবরাহ করা হবে এবং রেডিমেড প্রতিমাও বিক্রি শুরু হবে।
প্রতিমা শিল্পী যোগেশ চন্দ্র পাল বলেন, পালপাড়ায় কেউ কেউ ১০টা থেকে শুরু করে ২০টা প্রতিমা তৈরির অর্ডার নিয়েছে। ইতোমধ্যে সেগুলোর প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ করা হয়েছে। এরপর বাকি কাজ শেষ করে ডেলিভারি দেয়া হবে।
নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, শেরপুর ছাড়াও পাশের জেলা জামালপুরের বকশিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম এবং ময়মনসিংহ থেকে আমরা প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়ে থাকি। পূজার বেশ কয়েক দিন আগেই ওইসব অর্ডারের প্রতিমা আমাদের সরবরাহ করতে হয়। এছাড়া আমাদের এখানকার কারিগরদের প্রতিমা তৈরির জন্য যশোর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশালসহ দেশের ৮-১০টি জেলার পূজা উদযাপন কমিটির লোকজন নিয়ে যায়।
অধীর রজ্জন পাল বলেন, পালপাড়ায় প্রতিমা তৈরির কারিগরদের পাশপাশি তাদের পরিবারের ছোট-বড় সকল সদস্যরা বাড়িতে প্রতিমা তৈরিতে সহযোগিতা করে থাকে। তবে পুরুষরা বাড়ির অর্ডারের পাশাপাশি তারা বিভিন্ন ক্লাব ও বাসা-বাড়িতেও প্রতিমা তৈরির কাজ করছে।
বৃদ্ধ আশতোষ পাল বলেন, তাদের সেই আগের মতো সুদিন আর নেই। তাই তারা কোনরকমে তাদের পৈত্রিক পেশায় টিকে আছেন। তারপরও প্রতি বছর দুর্গাপূজার এ সময় আসলে পালপাড়ায় লোকজন ব্যস্ত সময় পার করে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত দে ভানু বলেন, জেলার সদর উপজেলাসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নকলায় এবার দেড় শতাধিক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতিও চলছে বেশ জোড়েসোরে।
এ সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসনের দুর্গাপূজার সার্বিক বিষয় নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি