ঢাকা, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ আপডেট : ১০ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

যমুনার পানি বিপৎসীমার উপরে

সিরাজগঞ্জে পানিবন্দী কয়েক হাজার মানুষ

  সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩১  
আপডেট :
 ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৮

সিরাজগঞ্জে পানিবন্দী কয়েক হাজার মানুষ
ছবি: প্রতিনিধি

আসামে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বেড়েই চলছে। ইতিমধ্যে চলনবিলসহ করতোয়া, ইছামতি, বড়াল, ফুলঝোড় ও হুড়াসাগর নদীর পানিতে জেলার ৫টি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের কয়েকশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

এদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সদর ও কাজিপুরে ২০৩ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা না করলেও নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী ৫টি উপজেলার নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। বন্যাত্রদের ঘর-বাড়িতে পানি ওঠায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় ও নিরাপদ স্থানে ছুটছেন এই সকল অসহায় মানুষেরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার মানুষ।

রোববার সকালে যমুনার পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনার পানি বাড়ার সাথে সাথে জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় ৪২টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে আছেন ১০ হাজার বানভাসি পরিবার। বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ২০৩ হেক্টর জমির আখ, আউশ ও আমন ধান, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল।

অপরদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জেলার কাজিপুর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তির্ন চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকায়গুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গনের কবলে পড়া গ্রামগুলির বসবাসকারিরা ঘর-বাড়ি ছেড়ে সব ধরনের আসবাবপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে। ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে ঘর-বাড়ি, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জ সদর ও কাজীপুর উপজেলার ২০৩ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। যার মধ্যে রোপা আমন ১৫৫ হেক্টর, সবজি ১৫ হেক্টর, আউশ ১২ হেক্টর, বীজতলা ৮ হেক্টর, কলা ৩ হেক্টর ও আখ ১০ হেক্টর। বাকি ৩টি উপজেলার হিসেব এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে কাজ চলছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত তিন উপজেলার প্রায় ১ হাজার ৬৫৭টি পরিবার পানিবন্দী হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। ৭৪০ টন জিআর চাল, ১৭ লাখ নগদ টাকা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, গো-খাদ্যের জন্য ৫ লাখ ও শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবন্দীদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী এসব বরাদ্দ বিতরণ করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ভারতের আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার বন্যা সতর্কীকরণ পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে, জেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। তবে কোনো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত