এক দফা দাবিতে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৮:২৬ আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৯:৪২
সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক দফা দাবি আদায়ে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপিসহ ৩৬টি রাজনৈতিক দল এই যৌথ কর্মসূচি ভিন্ন ভিন্নভাবে পালন করবে।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্মসূচি
আগামী ১৮ জুলাই, ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে মহানগরী ও জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা। ঢাকা মহানগরীতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত। ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগরীতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অনেক কথা বলেছি। এখন আর কথা বলার সময় নাই। যারা আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে তাদের সরিয়ে দেয়ার সময় হয়েছে। আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই। তবে এই সরকারের অধীনে না।
সমাবেশস্থলে বিএনপির কর্মীরা
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের এ কর্মসূচি হচ্ছে প্রাথমিক কর্মসূচি। এরপরও যদি আঙ্গুলে ঘি না ওঠে, তাহলে কী করে ঘি ওঠাতে হয় তা এদেশের মানুষ জানে। আজ শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ এখানে সমবেত হয়েছে। আগামীতে আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কর্মসূচি দিয়ে এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো।
তিনি বলেন, সুনামি এলে দেয়াল দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, ঝড় এলে বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। অনেক বাধা দিয়েও আজকের সমাবেশ বানচাল করতে পারেনি। এই সরকার বাংলাদেশবিরোধী সরকার, এই সরকার গণতন্ত্রবিরোধী সরকার, এই সরকার বাংলাদেশের জনগণবিরোধী সরকার।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজকের পর থেকে কীভাবে জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করবে, তা রাজপথে প্রমাণিত হবে। আজকের পর থেকে আওয়ামী লীগকে রাজপথে মোকাবিলা করা হবে। মামলা-হামলা দিয়ে আর জনগণকে আটকানো যাবে না। পুলিশ প্রশাসন এই ধরনের কাজ যদি অব্যাহতভাবে করতে থাকে, জনগণ তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আর বেশি দিন মিথ্যার ওপরে রাজত্ব করতে পারবেন না। সব বাধা উপেক্ষা করে আজকের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়েছে। আজকের সমাবেশ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধ শুরু হবে। এখন থেকে একটি আঘাত এলে দুটি আঘাত করব। গণতন্ত্র উদ্ধারের যুদ্ধে যেটি করা হবে সেটি আইন, সেটি সংবিধান।
খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ভোট চুরির যত ধরনের কৌশল করুক না কেন তা প্রতিহত করা হবে। প্রতিহত করে জনগণের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসতে থাকেন। সমাবেশ শুরুর আগে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে গান পরিবেশন করা হয়। দুপর ১২টা থেকে থেমে থেমে কয়েকবার বৃষ্টি হয়। বেলা দেড়টার দিকে বৃষ্টি বেশ জোরেশোরে শুরু হয়। চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। বৃষ্টিতে অধিকাংশ নেতা-কর্মী ভিজে যান।
ঢাকা ছাড়াও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদীসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নেতাকর্মীরা আসেন সমাবেশে। কাকরাইল থেকে শুরু করে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে তারা অবস্থান নেন। এছাড়াও আশপাশের সড়ক ও গলিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী দেখা যায়। সমাবেশ কেন্দ্র করে নয়াপল্টন এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহাজান ওমর, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নুল আবেদিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সরকারের বিদায় ছাড়া কোন বিকল্প নেই
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি