র্যাবের অভিযান
এরফান সেলিমের বাসা থেকে অস্ত্র ও মদ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২০, ১৭:০৫ আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২০, ১৯:২৩
ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফান সেলিমের বাসা থেকে অবৈধভাবে মজুত রাখা বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করেছে র্যাব। এছাড়া তার শোবার ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ ওয়াকিটকি, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চকবাজারের ২৬ নম্বর দেবীদাস ঘাট লেনের ওই বাড়ির চতুর্থ ও পঞ্চম তলাটি ডুপ্লেক্স সিস্টেমে নির্মাণ করা হয়েছে। ৪র্থ তলার উত্তর কর্ণারের রুমটিতে বসবাস করতেন এমপি পুত্র ইরফান সেলিম।
তার রুমের তোশকের নিচে ম্যাগজিন ভর্তি একটি বিদেশী পিস্তল পাওয়া গেছে। এছাড়া ৫ম তলায় পূর্ব পাশের কর্নারে ৫টি ওয়ারল্যাস এবিএস সিস্টেম ও ৪০টি ওয়াকিটকি সেট, একটি হ্যান্ডকাপ, একটি বন্দুক, বিদেশী মদের বোতল ও বিয়ার মদ পাওয়া গেছে।
এসব সরঞ্জাম ও আগ্নেয়াস্ত্র ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য এখনো যে অবস্থায় ছিল, তেমনটি রেখে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম।
র্যাব জানায়, আটক ইরফান মোহাম্মদ সেলিম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও নোয়াখালী -৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করীম চৌধুরীরর মেয়ের জামাতা।
গতকাল রোববার রাতে এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও আজ (সোমবার) ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘এরফানের গাড়ি ওয়াসিফকে ধাক্কা মারার পর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনি মেরে ফেলব’ বলে কিল-ঘুষি মারেন এবং আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।’
‘তারা আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে আমার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
মামলায় মোট পাঁচটি ফৌজদারি অপরাধের ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরাধগুলো হলো- দণ্ডবিধি ১৪৩ অনুযায়ী বেআইনি সমাবেশের সদস্য হয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধমূলকভাবে বল প্রয়োগ করা, ৩৪১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, ৩৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার কাজে বাধাদানের উদ্দেশ্যে আহত করা, ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার ওপর বল প্রয়োগ করা এবং ৫০৬ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার।
সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে এরফান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এদিকে হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই আদেশ দেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ/এইচকে
অন্যরা যা পড়ছেন:
> হাজী সেলিমের গাড়িচালক রিমান্ডে
> এমপি হাজী সেলিমের ছেলে গ্রেপ্তার