লালমনিরহাটে পানি কমলেও বাড়ছে দুর্ভোগ
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২০, ২০:১৫
লালমনিরহাটে ধরলা নদীর পানি শুক্রবার সকালে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শনিবার সকালে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর পর ধরলা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মানুষজনের দুর্ভোগ বেড়ে চলছে।
সদর ও আদিতমারী উপজেলার তিনটি ইউনিয়েনের ২০টি গ্রাম ধরলা নদীর পানি বাড়লে প্লাবিত হয়। চরম দুর্ভোগে পড়ে সেসব গ্রামের ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা চর ফলিমারীতে বানভাসি মানুষের কষ্ট বেড়েছে অনেক। বানভাসিরা গবাদিপশু-পাখি ও ঘরের আসবাবপত্রসহ ফসলাদি নিয়ে চরমভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ওই এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র (মুজিব কেল্লা) বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত শুরুর দাবি করেন বন্যার্ত লোকজন।
চর ফলিমারীতে বসবাস করেন তিনশ' পরিবারে প্রায় ১৫০০ মানুষ। গ্রামের সবাই কৃষি ও মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামের পশ্চিম ও দক্ষিণে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া আর পূর্ব ও দক্ষিণে ধরলা নদী।
ধরলার পানি বাড়লে প্রথমে এই চরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। প্লাবিত হয় পুরো গ্রাম। এখানে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। নেই সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়নের বাঁধ বা উঁচু কোনো স্থান। শুধু ছোট একটি বাজার রয়েছে। সেই বাজারটিতেও বন্যার পানি ওঠে। সেখানে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের দাবি তুলেছেন বানভাসিরা।
চর ফলিমারী এলাকার বানভাসি তমির উদ্দিন বলেন, আমরা বানের পানিতে ভাসছি। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে আছি। বাজারেও বন্যার পানি ওঠে। দীর্ঘদিন থেকে এখানে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি।
মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, চার বছর আগে চর ফলিমারীতে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছিল। কাজের অগ্রগতিও হয়েছিল অনেকটা। কিন্তু মাঝপথে থেমে যায়। এখানে মুজিব কেল্লা তৈরির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিধি দল গত ফেব্রুয়ারিতে এসে পরিদর্শন করেছে। মুজিব কেল্লা হলে এটি একদিকে যেমন বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে উপকারে আসবে, অন্যদিকে কমিউনিটির উন্নয়নে নানা সামাজিক কাজকর্মে সহায়ক হবে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বলেন, চর ফলিমারীতে মুজিব কেল্লা তৈরির টেন্ডার হয়েছে ও ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারেননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে চর ফলিমারীতে মুজিব কেল্লা তৈরির কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, মুজিব কেল্লা তৈরির কাজ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দেখাশুনা করা হচ্ছে। আমি মনে করি, মুজিব কেল্লা তৈরি হলে চর ফলিমারীর মানুষের দুঃখ দূর হবে। জেলায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর আশপাশে বন্যা পরিস্থিতির নতুন করে অবনতি হয়নি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে