ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

সূপর্ণার প্রেম না অন্য কিছু !

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২০, ২১:৪৩

সূপর্ণার প্রেম না অন্য কিছু !

প্রেম না অন্য কিছু, তা বুঝতে পারছে না পুলিশ। ৫৯ বছরের সোহরাব হোসেন প্রেমে পড়তেই পারে এটা স্বাভাবিক। কারণ প্রেম না মানে বয়স, সমাজ-সংস্কৃতি, জাত-কুল। কিন্তু অভিযোগটা অন্য জায়গায়।

সেই কবে পরিবারের সাথে দেশ ছেড়েছিলেন সূপর্ণা মন্ডল। যখন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়েন সেই সময় পরিবারের সাথে চলে যান ভারতের

কলকাতার উত্তর চব্বিশ পরগুনার বাড়ুইহাটিতে। ভাারতের নাগরিক তিনি। সেখানেই কেটে গেছে ৩৭ বছর। এখন তিনি ৪৬ এ। তিনি দুই সন্তানের জননী। তবে স্বামী পরিত্যক্ত।

যশোরের সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের পোলতাডাঙ্গা গ্রামে ছিলো তাদের বসবাস। পিতা সুধীর রায় গত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে। দেশের সাথে যোগাযোগ ছিল তার নিয়মিত। অন্যান্য আত্মীয় স্বজন রয়েছে যশোরে।

সূপর্ণার অভিযোগ- যশোর সদর উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামের মৃত ফটিক হোসেনের ছেলে সোহরাব হোসেনের সাথে তার প্রেমের

সম্পর্ক চলছে। সোহরাব এক সময়কার (যশোরে বাল্যকালে বসবাসের সময়) প্রতিবেশি। ভারতে থাকলেও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন

যোগাযোগ মাধ্যমে তার সাথে কথা হয়। সোহরাবের সাথে ৩/৪ মাস হলো ভালোভাবে যোগাযোগ। তখন থেকে সম্পর্ক প্রেমের। গত নভেম্বরে তিনি যশোরে আসেন পাসপোর্টযোগে। সোহরাবের সাথে দেখা করে চলে যান। আবার তারই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে দেশে আসেন। যোগাযোগ হয় সোহরাবের সাথে। তার সাথে বেশ কয়েক জায়গায় বেড়িয়েছেন।

ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় একসাথে থেকেছেন। বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তাই তিনি এগিয়েছেন অনেক দুর। কিন্তু হঠাৎ সোহরাবের অস্বীকার। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শহরের পালবাড়ির মোড় এলাকায় ছেড়ে দেয়া হয় তাকে। এরপর আর যোগাযোগ করেননি সোহরাব। বিয়ের কথাও অস্বীকার করছেন। সে কারণে তিনি যশোর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ বুধবার সকালে সোহরাবকে থানায় নিয়ে আসে। সোহরাব বর্তমানে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রথামিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী হিসাবে কর্মরত।

সূপর্ণ রায় জানান, তার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন সোহরাব। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আরো তিনটি স্বর্ত ছিলো। সব অস্বীকার করছে। এখন বিচার চাইছি।

তিনি বলেন, শুনেছি বাংলাদেশের পরিসেবা অনেক ভাল। তাই অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ যা জিজ্ঞাসা করেছে বলেছি। এখন দেখা যাক কী হয়।

যশোরে কোথায় থাকেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সাজিয়ালিতে মামার বাড়ি। এছাড়া যশোরের বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয় স্বজন রয়েছে। সেখানেই থাকি। তবে অনেক প্রশ্নে উত্তর এড়িয়ে যান সূচতুর সূপর্ণা। প্রশ্ন করলেই নানা ‘ভবের কথা’ বলতে থাকেন।

সোহরাব হোসেন জানায়, ৩৭/৩৮ বছর আগে সূপর্ণার পিতা গ্রাম ছেড়ে ভারতে চলে যান। একটি আইনি প্যাচে জড়িয়ে পরিবার

সাথে নিয়ে দেশে ছাড়েন। শুনেছি ভারতেই তার মৃত্যু হয়েছে। দেশে আর কখনো আসেননি। প্রতিবেশি সূপর্ণাকে ছোট বেলাই পড়িয়েছি। ভারতে যাওয়ার পর আর কখনো গ্রামে আসেনি। গত নভেম্বরে সে হঠাৎ তার বাড়িতে আসে। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। আমার স্ত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নম্বর নেয়। এরপর ফোনে সে যোগাযোগ করতে থাকে। দেখাও হয়। ছোট বেলার প্রতিবেশি তাই কথা হয়েছে দুই

একদিন।

সূপর্ণার সাথে প্রেমের সম্পর্ক আছে কি-না জানতে চাইলে এক বাক্যে সোহরাব বলেন, ‘আমার স্ত্রী আছে। ৫ সন্তানের পিতা আমি। সরকারি চাকরি করি তাও শেষ পর্যায়ে। কী ভাবে তার সাথে প্রেম করি।

ঢাকায় একসাথে গিয়েছিলেন, থেকেছিলেন এই সব বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সূপর্ণা স্বামী পরিত্যক্ত। শুনেছি ভারতে অনেক মানুষকে নানা ভাবে ফাঁসিয়ে স্বার্থ হাসিল করেছেন। এখন দেশে এসে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তা ছাড়া সে হিন্দু আর আমি মুসলমান। দুইজন দুই দেশের নাগরিক। তাছাড়া বয়স এখন ৫৯। এই বয়সে তাকে প্রলোভন দেখানো, বিয়ে করা আদৌ কী সম্ভব-উল্টো প্রশ্ন করেন সোহরাব।’ সূপর্ণার সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিক থানায় এসে অভিযোগ করেছেন তিনি প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সোহরাব হোসেনকে থানায় নেয়া হয়েছে। সূপর্ণাকেও থানায় নেয়া হয়েছে। এই বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিবেন ।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত